লাজুকতা যেভাবে সুন্দর করে জীবনকে

Comments · 5104 Views

আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টির সেরা বানিয়েছেন এবং তাকে কিছু সহজাত গুণ দান করেছেন।

আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টির সেরা বানিয়েছেন এবং তাকে কিছু সহজাত গুণ দান করেছেন। সেসব গুণের মধ্যে একটি হলো বিনয়, বিনয় ও বিনয়। অন্যদিকে, উত্তম চরিত্র মানব জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ, যাকে মানব জীবনের রত্নও বলা যেতে পারে। আর উত্তম চরিত্রের গুণ হল বিনয় বা লজ্জা-শরম-লজ্জা।

জনসাধারণের অবমাননা হতে পারে এমন কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকা বা বিরত থাকাকে হায়া বা লজ্জা বলে।

এই লজ্জাই মানুষকে স্থূল, অশ্লীল ও বিভিন্ন খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে। ফলে মানুষ উত্তম চরিত্রের সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছাতে সক্ষম হয়। পক্ষান্তরে, বিবেক তাকে এমন কোন কাজ করতে বাধা দেয় না যাতে কোন লজ্জা নেই, যার ফলে তার জন্য ভাল-মন্দ সকল কাজ করা খুব সহজ ও সাধারণ হয়ে যায়।

বিনা বাধায় মন যা চায় তাই করুক। ফলে সমাজের চোখে তিনি তুচ্ছ ও ঘৃণার পাত্র হয়ে ওঠেন।

শালীনতা ও শালীনতার গুরুত্ব

শরম-হায়া বা লাজুকতা ঈশ্বরের বান্দার প্রতি মানুষের চরিত্রের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গুণ। শালীনতা মানুষকে স্থূল ও অশ্লীল কাজ এড়িয়ে চলতে এবং ভালো ও ভালো ও শালীন কাজ করতে সাহায্য করে।

এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন, 'আর আল্লাহ হারাম করেছেন অশ্লীলতা, খারাপ কাজ ও জুলুম। তিনি আপনাকে উপদেশ দিচ্ছেন, যাতে আপনি মনে রাখতে পারেন। (সূরা: নাহল, আয়াত: 90)

ইসলামের দৃষ্টিতে অশ্লীলতা সম্পূর্ণ হারাম। আল্লাহ তায়ালা বলেন, 'বলুন, নিশ্চয় আমার প্রতিপালক অশ্লীল কাজকে হারাম করেছেন। সেটা প্রকাশ্যে হোক বা গোপনে।

(সূরা: আরাফ, আয়াত: 33)

 

এ দুটি আয়াতে সমস্ত অশ্লীল আচরণ উচ্চারণ থেকে নিষেধ করা হয়েছে, নিষেধের পদ্ধতিতে অশ্লীলতা ও শালীনতা অবলম্বন করার নির্দেশও রয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ একদা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এক আনসারী সাহাবীর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। সে তখন তার ভাইকে লজ্জিত করার নির্দেশ দিচ্ছিল। এমন সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে যেতে দাও। কারণ লজ্জা ঈমানের অঙ্গ। (তিরমিযী, হাদীসঃ ২৬১৫)

হাদিস অনুযায়ী লজ্জা ঈমানের অঙ্গ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, লজ্জা ঈমানের অঙ্গ। (মুসলিম, হাদিস : ৩৫)

লজ্জা ও বিনয়ের উপকারিতা

বিনয় ও সংকোচ জীবনকে সুন্দর করে। আনাস (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন কিছুর অশ্লীলতা তাকে অপবিত্র করে। আর যেকোনো কিছুতেই লজ্জা তাকে সুন্দর করে। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: 12689)

প্রসিদ্ধ, হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালাম তাঁর শালীনতা ও শালীনতার কারণে শুধু কারাগার থেকে মুক্তি পাননি, তৎকালীন রাজ্যের রাজা তাঁকে খুঁজে পেয়ে মিসরের শাসক বানিয়েছিলেন। কারণ, তিনি সবসময় লাজুকতা ও সংকোচ প্রদর্শন করতেন।

আমরা যদি হযরত ইউসুফ (আঃ) এর মত আমাদের ইজ্জত ও লজ্জাকে রক্ষা করতে পারি, পাপ, পাপাচার এড়িয়ে চলতে পারি এবং সকল প্রকার পাপাচার থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখতে পারি তাহলে আল্লাহ আমাদের সম্মান ও সম্মানের মুকুট পরিয়ে দেবেন।

মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে শালীনতা ও শালীনতার গুণ অর্জন করার তৌফিক দান করুন। আমীন

Comments